রামধনুর দেশে গত ২৯ বছরে টেস্ট সিরিজ জয় অধরা। তবে এই নিয়ে চার বার দক্ষিণ আফ্রিকা (South Africa) সফরে যাওয়া চেতেশ্বর পূজারা মনে করেন, বিরাট কোহলির নেতৃত্বে এ বার টিম ইন্ডিয়া ইতিহাস গড়তে পারবে।
২০১৭-১৮ মরশুমে প্রোটিয়াসদের বিরুদ্ধে ২-১ গোলে হেরে গিয়েছিল ভারত। তবে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল দল। ২০১৮-১৯ মরশুমের পর ২০১৯-২০ সফরে জোড়া টেস্ট সিরিজ জিতেছিল ভারতীয় দল। এমনকি চলতি বছর জো রুটের ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তাদের দেশে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে ছিল ভারতীয় দল। তাই পূজারার মতে আসন্ন সিরিজে ‘মেন ইন ব্লু’ ব্রিগেড বিজয় ডঙ্কা ওড়াবে।
বিসিসিআই-এর ওয়েবসাইটে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পূজারা বলেন, “গত কয়েক বছর আমরা বিদেশে ধারাবাহিক ভাবে সাফল্য পেয়েছি। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে জোড়া টেস্ট সিরিজ জেতার পর, ইংল্যান্ডেও আমরা এগিয়ে ছিলাম। বিদেশে একাধিক সিরিজ জয়ের জন্য আমাদের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে।
আমরা দক্ষিণ আফ্রিকায় এখনও পর্যন্ত টেস্ট সিরিজ জিততে না পারলেও, দলের একাধিক সদস্য এই নিয়ে বেশ কয়েকবার এখানে এসেছে। দক্ষিণ আফ্রিকার বাউন্সি পিচ ও এখানকার আবহাওয়া সম্পর্কেও আমাদের অভিজ্ঞতা আছে। কোন বল ছাড়া উচিত আর কোন বলে রান তুলতে হবে সেটা আমরা জানি। তাই মাঠে নেমে পারফরম্যান্স করতে অসুবিধা হবে না।”
একে তো ঘরের মাঠ, এর মধ্যে আবার পরিসংখ্যান দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে কথা বলছে। তবে বাস্তব চিত্র বলছে অন্য কথা। ফ্যাফ ডু প্লেসিস, এবি ডিভিলিয়ার্স, হাসিম আমলা, মর্নি মর্কেল, ডেল স্টেইন, ভার্নন ফিল্যান্ডারের মতো একাধিক তারকা অবসর নিয়ে ফেলেছেন।
সঙ্গে যোগ হয়েছে ছন্দে থাকা জোরে বোলার অ্যানরিচ নোকিয়ার চোট। পায়ের পুরনো চোটের জন্য ইতিমধ্যেই টেস্ট সিরিজ থেকে ছিটকে গিয়েছেন এই ‘স্পিড স্টার’। সেই জন্য বক্সিং ডে টেস্টের আগে প্রোটিয়াস অধিনায়ক ডিন এলগারের সমস্যা আরও বেড়েছে।
যদিও পূজারা বলেন, “ঘরের মাঠে সবাই ভাল পারফরম্যান্স করে। দক্ষিণ আফিকার রেকর্ড তো আরও আকর্ষণীয়। ওদের একাধিক নামী ক্রিকেটার অবসর নিলেও আমরা বিপক্ষকে মোটেও হাল্কা ভাবে নিচ্ছি না।
কারণ ওদের জোরে বোলিং বেশ ভাল। তবে ২০১১ সালের পর ২০১৩ ও ২০১৭ সালেও এখানে খেলেছি। প্রথম সফরে টপ ফর্মে থাকা মর্নি মর্কেল, ডেল স্টেইনের বিরুদ্ধে খেলেছি। তাই এ বারও সমস্যা হবে না।”
গত বছর কোভিডের সময় থেকে একাধিক জৈব বলয়ে থেকেছে ভারতীয় দল। মাসের পর মাস কঠিন জৈব বলয়ে থাকার জন্য কোহলি, রোহিত শর্মা, জসপ্রীত বুমরার মতো একাধিক সিনিয়র ক্রিকেটার বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। তবে এ বারের দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের জৈব বলয় নিয়ে কোহলিবাহিনীর কোনও অভিযোগ নেই। প্রথম টেস্ট শুরু হওয়ার আগে সেটা জানিয়ে দিলেন পূজারা।
শেষে তিনি যোগ করেন, “আমার মতে এটা সবচেয়ে সেরা জৈব সুরক্ষা বলয়। গত বছর থেকে একাধিক বলয়ে থাকলেও এই বলয় একেবারে আলাদা। একটি রিসর্টে থাকার জন্য এখানে মুক্ত বাতাস রয়েছে। রয়েছে গাছপালা ও সুন্দর মাঠ। দিনের শেষে সবাই মিলে আড্ডা দেওয়ার জন্য রয়েছে খোলামেলা পরিবেশ।
এমন জায়গায় থাকার জন্য আমরা সবাই ইতিবাচক মানসিকতায় রয়েছি। সেটা শুধু টেস্ট সিরিজ নয়, একদিনের সিরিজেও কাজে লাগবে। তাছাড়া আগামী কয়েক সপ্তাহে বাইশ গজে লড়াই করার জন্য আমাদের সাপোর্ট স্টাফরাও দারুণ কাজ করছে। সব মিলিয়ে আমরা একেবারে ফুরফুরে মেজাজে রয়েছি। এ বার শুধু মাঠে নামার অপেক্ষা।”