ভাড়ার টাকা না থাকায় ২ শিশুকে লঞ্চ থেকে ছুড়ে ফেলল নদীতে ! দেখুন বিস্তারিত

রাজধানী ঢাকার সদরঘাট থেকে ছেড়ে আসা চাঁদপুরগামী ইমাম হাসান-৫ লঞ্চ থেকে মুন্সীগঞ্জের মেঘনা নদীতে দুই শিশুকে ছুড়ে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে লঞ্চ কর্মচারীদের বিরুদ্ধে। ভাসতে থাকা ওই দুই শিশুকে জীবিত উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার সকাল ১০টার দিকে মুন্সীগঞ্জ সীমানাধীন মেঘনায় ঘটনাটি ঘটে।

উদ্ধারকৃত দুই শিশু হলো— মেহেদুল হাসান (১৩) ও সাকিব হাসান (১২)।
পুলিশ জানিয়েছে, তারা ঢাকার সদরঘাট এলাকায় থাকে এবং লঞ্চে পানি বিক্রি করে।

শনিবার দিবাগত রাতে গজারিয়া থানার ওসি মো. রইছ উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

উদ্ধার হওয়া ওই দুই শিশু জানায়, লঞ্চ কর্মচারীরা তাদের নদীতে ফেলে দিয়েছে। কারণ তাদের কাছে ভাড়ার টাকা ছিল না। তবে এখন দুজনই নিরাপদে রয়েছে।

গজারিয়া থানা পুলিশ এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ করেছে। ভিডিওতে দেখা যায়, একটি নৌকায় দুই শিশুকে প্রশ্ন করছেন গজারিয়া থানার ওসি রইছ উদ্দিন? জবাবে শিশুরা বলে, নদীতে ফেলে দিয়েছে ইমাম হাসান-৫ লঞ্চের স্টাফরা। ছাদে উঠেছি আর টাকা দিইনি, তার জন্য ফেলে দেয়।

রইছ উদ্দিন আরও বলেন, মুন্সীগঞ্জ গজারিয়া লঞ্চ টার্মিনাল থেকে আনুমানিক দুই কিলোমিটার দূরে একটি স্পিডবোটে মেঘনা নদীতে অবস্থানকালে দুই শিশুকে ভাসতে দেখে এগিয়ে যাই। তার পর তাদের উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘাটে নিয়ে যাই। তাদের আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কথা বলে ঢাকা-সদরঘাটগামী এমভি আল-বোরাক লঞ্চে উঠিয়ে দেওয়া হয়। ভাড়ার টাকা না থাকায় লঞ্চের স্টাফরা তাদের মাঝনদীতে ফেলে দিয়েছিল।

তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইমাম হাসান-৫ লঞ্চের মাস্টার মো. দেলোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, দুই শিশু নিজেদের ইচ্ছায় নদীতে ঝাঁপ দিয়েছে। যাত্রীরা আমাদের অবগত করে।

তিনি আরও বলেন, বড় বড় লঞ্চগুলো যখন ঘাটগুলোর সামনে দিয়ে যায়, তখন স্থানীয় ট্রলারগুলো লঞ্চের গায়ে ভিড়ে। সেই সময় যাত্রীরা ওঠানামা করে। মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘাটের কাছ দিয়ে যাওয়ার সময় দুই শিশু ট্রলার দেখতে না পেয়ে কিছুটা সামনে যাওয়ার পর লাফ দেয়। তারা ভেবেছিল ট্রলার এসে তাদের নিয়ে যাবে। কিন্তু এই লঞ্চ মুন্সীগঞ্জ ঘাটের নোঙর করে না।

তাদের ফেলে দেওয়া হয়নি। সব যাত্রী দেখেছেন। আমরা ফেলে দিলে যাত্রীরা আমাদের বাধ্য করে লঞ্চ থামিয়ে দিতে পারত। তা ছাড়া এসব শিশু পানি বিক্রেতার কাছ থেকে ভাড়া নেওয়া হয় না, বলেন দেলোয়ার হোসেন।

Add a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.