একদিকে প্রচণ্ড গরমে বেলা বাড়তেই পথে-ঘাটে কমে যাচ্ছে লোকের সংখ্যা। তাপপ্রবাহের জেরে ঘেমেনেয়ে একাকার মানুষ। গোটা দেশেই বিভিন্ন জায়গায় গড় তাপমাত্রা যা দাঁড়িয়েছে তাতে দেখা গিয়েছে তীব্র তাপদাহে পুড়ছে দেশ। গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। এদিকে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের প্রভাবে সপ্তাহজুড়ে নেই বৃষ্টির আভাস।
বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল, তা আরও পরিণত হয়েছে। শনিবারের মধ্যে বঙ্গোপসাগরের আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের কাছাকাছি এলাকায় একটি লঘুচাপের সৃষ্টি হতে পারে।
২৫ মে রাত থেকে ২৬ মের মধ্যে উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হতে পারে একটি লঘুচাপ।
যা পরবর্তীতে সুস্পষ্ট লঘুচাপ, নিম্নচাপ, গভীর নিম্নচাপ, এরপর ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াশ’ এ রূপ নিয়ে বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হানতে পারে।
সম্ভাব্য এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেয়া হয়েছে ইয়াশ। সম্প্রতি এই তথ্য জানিয়েছেন আবহাওয়া অফিস। আবহাওয়াবিদ মো. শাহিনুল ইসলাম বলেন, ২২ তারিখের কাছাকাছি সময় দীর্ঘ লঘুচাপ হতে পারে।
আর যদি লঘুচাপ হয়ে সেটা স্টেজ পরিবর্তন করে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়, তবে সেটা ‘ইয়াস’ নাম ধারণ করবে। বিশ্বের বিভিন্ন আবহাওয়ার পূর্বাভাস কেন্দ্রগুলোও জানায়, ২৫ মে মধ্যরাত থেকে ২৬ মে সন্ধ্যার মধ্যে ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াশ’ বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারে। আম্পান যেদিক দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করেছিল, সেই সাতক্ষীরা, খুলনার ও চট্টগ্রাম উপকূল বিস্তৃত হতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’।
সর্বশেষ পূর্বাভাস মতে, মধ্যম মানের এ ঘূর্ণিঝড়টি প্রবেশের সময় বাতাসের গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১২০ থেকে ১৫০ কিলোমিটার। তবে গতিবেগ কম হলেও ২৬ মে ভরা পূর্ণিমার কারণে উপকূলীয় এলাকায় জলোচ্ছ্বাসসহ বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, ৮ থেকে ১২ ফুটের বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস বয়ে যেতে পারে উপকূল দিয়ে।
প্রসঙ্গত, সাধারণত যে কোনো ঘূর্ণিঝড় প্রচুর বৃষ্টিপাত নিয়ে আসে। সেই হিসেবে ইয়াস আসায় তাপপ্রবাহ কিছুটা কমতে পারে। সাধারণত সমুদ্রের পানির তাপমাত্রা ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করলে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হতে পারে। সে কারণে বিদ্যমান তাপপ্রবাহের সঙ্গে লঘুচাপ-নিম্নচাপ এবং ঘূর্ণিঝড়ের সম্পর্ক আছে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।
উল্লেখ্য, বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার আঞ্চলিক কমিটি ঝড়ের নামকরণ করে থাকে। যেমন- ভারত মহাসাগরের ঝড়গুলোর নামকরণ করে এই সংস্থার আটটি দেশ। দেশগুলো হচ্ছে— বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, মিয়ানমার, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড এবং ওমান, যাদের প্যানেলকে বলা হয় ডব্লিউএমও বা ইএসসিএপি। এবারের ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াশ’ নামকরণ করেছে ওমান।