বিরাট কোহলি বনাম বিসিসিআই বিতর্ক থামার নাম নেই। বরং যতদিন যাচ্ছে এই বিতর্ক নিয়ে ধিকিধিকি আগুন জ্বলছেই। কারণ এ বার এই ইস্যুতে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির একটি ইংরেজি দৈনিকে মুখ খুলে বোর্ড সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের উপর একরাশ ক্ষোভ উগরে দিলেন দিলীপ বেঙ্গসরকার।
দেশের প্রাক্তন অধিনায়ক ও প্রাক্তন জাতীয় নির্বাচকের মতে, কোহলিকে ভারতের (Team India) একদিনের দলের নেতৃত্ব থেকে ছেঁটে ফেলার এক্তিয়ার বোর্ড সভাপতি সৌরভের নেই। বরং এই কাজটা জাতীয় নির্বাচক মণ্ডলীর উপর ছেড়ে দেওয়া উচিত ছিল। কোহলির কাছ থেকে একদিনের দলের তাজ কেড়ে নেওয়ার ব্যাপারে বোর্ড সভাপতির নাক গলানো উচিত ছিল না। ঘটনাটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। এমনটাই মনে করেন বেঙ্গসরকার।
সৌরভকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে বেঙ্গসরকার বলেন, “কোহলির কাছ থেকে একদিনের দলের অধিনায়কত্ব কেড়ে নেওয়ার পুরো ঘটনা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। এটা খুবই স্পর্শকাতর বিষয়। তাই বিসিসিআই-এর আরও পেশাদার মানসিকতা নিয়ে সামলানো উচিত ছিল।”
এরপরেই তাঁর বিস্ফোরক মন্তব্য, “আমার মতে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের কথা বলার অধিকার নেই। কারণ ও এখন বিসিসিআই-এর সভাপতি। দল নির্বাচন কিংবা অধিনায়কত্ব ইস্যু নিয়ে তো জাতীয় নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান চেতন শর্মা কথা বলবে। এই বিষয়ে চেতন শর্মারই কথা বলা উচিত ছিল।”
দক্ষিণ আফ্রিকা উড়ে যাওয়ার আগে সাংবাদিক সম্মেলনে এসেছিলেন কোহলি। সেখানে এসে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে টেস্ট দলের অধিনায়ক সটান বলে দেন যে সীমিত ওভারের দায়িত্ব ছাড়ার ব্যাপারে বিসিসিআই-এর কেউ অনুরোধ করেননি।
এমনকি একদিনের দলের নেতৃত্ব থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারেও বোর্ডের দায়সারা মনোভাব ছিল। কোহলির দাবি ছিল, গত ৮ ডিসেম্বর মুখ্য নির্বাচক চেতন শর্মা দল নির্বাচনের মাত্র দেড় ঘণ্টা আগে ফোন করেছিলেন।
টেস্ট দল নিয়ে আলোচনার একেবারে কোহলিকে একদিনের দলের নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারটা জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। যদিও কয়েক সপ্তাহ আগে সৌরভ একাধিক জাতীয় সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছিলেন যে, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে তিনি কোহলিকে অধিনায়কত্ব না ছাড়ার বিষয়ে অনুরোধ করেছিলেন।
এই বিষয়ে কে সত্যি বলছেন, কার মুখ থেকে অর্ধ সত্য কথা শোনা গিয়েছে সেটা বোঝার উপায় নেই। তবে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির একটি ইংরেজি দৈনিককে বেঙ্গসরকার আরও বলেন, “সৌরভ এই বিষয়ে আগেই কথা বলেছিল।
এরপর বিরাট কোহলি নিজের স্বপক্ষে যুক্তি দিয়েছে। কিন্তু আমার মতে এটা তো মুখ্য জাতীয় নির্বাচক ও অধিনায়কের ব্যাপার। এই ইস্যুতে কথা বলার এক্তিয়ার বোর্ড সভাপতির নেই।”
শেষে তিনি আরও যোগ করেন, “সময় বদলে গিয়েছে। সেটা বিসিসিআই-এর বোঝা উচিত। কোহলির মতো ক্রিকেটারকে আরও সম্মান দেওয়া উচিত ছিল। কারণ কোহলি একাধিক ম্যাচ জিতিয়ে দেশের সম্মান বাড়িয়েছে। তাই ওর আরও সম্মান প্রাপ্য ছিল।”
কোহলি ‘বিরাট’ বিস্ফোরণ ঘটিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা উড়ে যাওয়ার পর, বেঙ্গসরকার ছারাও সুনীল গাভাসকর থেকে শুরু করে কপিল দেবের মতো দিকপালরা এই স্পর্শকাতর ইস্যু নিয়ে মুখ খুলেছেন।
তবে বোর্ড সভাপতি সৌরভ ও বিসিসিআই-এর বাকি কর্তারা এই বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি নন। হয়তো কোহলিকে জবাব দেওয়ার জন্য সঠিক সময়ের অপেক্ষায় রয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড।